কুরআন মাজিদ পড়ার গুরুত্ব

কুরআন মাজিদ পড়ার গুরুত্ব সত্যিই অপরিসীম। এটি মুসলিমদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ সর্বশেষ আসমানী কিতাব। কুরআন পড়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিচে তুলে ধরা হলো:


১. আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ

কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে। প্রতিটি হরফ পাঠের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা নেকি দান করেন। হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি হরফ পাঠ করবে, তার বিনিময়ে সে একটি নেকি পাবে; আর একটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, ‘আলিফ-লাম-মীম’ একটি হরফ; বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ।” (তিরমিযী)


২. হেদায়েত ও আলোর দিশা

কুরআন হলো মানবজাতির জন্য হেদায়েতের আলোকবর্তিকা। এটি মানুষকে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য চিনিয়ে দেয় এবং সঠিক পথের দিশা দেখায়। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, “নিশ্চয়ই এই কুরআন এমন পথ দেখায় যা সর্বাধিক সরল এবং মুমিনদের জন্য সুসংবাদ দেয়, যারা সৎকর্ম করে যে, তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার।” (সূরা ইসরা: ৯)


৩. আত্মিক শান্তি ও প্রশান্তি

কুরআন তিলাওয়াত ও এর অর্থ অনুধাবন আত্মিক শান্তি ও প্রশান্তি এনে দেয়। এটি মনকে পরিশুদ্ধ করে এবং দুশ্চিন্তা দূর করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যারা ঈমান আনে এবং যাদের অন্তর আল্লাহর স্মরণ দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রেখো, আল্লাহর স্মরণ দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি লাভ করে।” (সূরা রাদ: ২৮)


৪. জ্ঞান বৃদ্ধি ও প্রজ্ঞা অর্জন

কুরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা মহাবিশ্বের সৃষ্টি, জীবন ও জগৎ সম্পর্কে বহু আয়াত নাজিল করেছেন। নিয়মিত কুরআন অধ্যয়ন মানুষকে জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় সমৃদ্ধ করে তোলে। এটি অতীতের ঘটনা, নবীদের কাহিনী এবং কিয়ামতের নিদর্শন সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে।


৫. শাফায়াত লাভ

কিয়ামতের দিন কুরআন তার পাঠকারীর জন্য শাফায়াতকারী হবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা কুরআন পাঠ করো। কারণ কিয়ামতের দিন তা তার পাঠকারীর জন্য সুপারিশকারী হিসেবে আসবে।” (মুসলিম)


৬. দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ

কুরআন অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানে কল্যাণ বয়ে আনে। যে ব্যক্তি কুরআনের বিধান মেনে চলে, আল্লাহ তাকে দুনিয়াতে সম্মান ও আখিরাতে জান্নাত দান করেন।


সুতরাং, কুরআন মাজিদ শুধু তেলাওয়াতের কিতাব নয়, এটি অধ্যয়ন, অনুধাবন এবং জীবনে বাস্তবায়নের কিতাব। এর গুরুত্ব অপরিসীম এবং প্রতিটি মুসলিমের জন্য এটি নিয়মিত পাঠ করা অত্যাবশ্যক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *